Menu

ত্রৈমাসিক জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা বার্তা

₹50
Amazing Science

ত্রৈমাসিক জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা বার্তা

Product details

জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা বার্তা গোবরডাঙা জীববৈচিত্র ব্যবস্থাপনা সমিতি কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত একটি ত্রৈমাসিক বাংলা পত্রিকা, যার প্রধান উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণ, বিশেষত ছাত্রদের, মধ্যে জীববৈচিত্র্য, বাস্তুতন্ত্র তথা পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার ঘটানো। 

আমাদের জীববৈচিত্র্য সম্পদ আমরাই রক্ষা করব, পরম যত্নে- আপন মমত্ব ভরা আন্তরিকতায়। স্কুলে ছোটোবেলা থেকে চাই পরিবেশবান্ধব শিক্ষায় হাতেখড়ি। প্রকৃতির চারপাশে যা দেখি - গাছপালা, ফড়িং, প্রজাপতি, সাপ, ব্যাঙ, ইদুর ইত্যাদি সবাই পরিবেশের বন্ধু। এদের রক্ষার বার্তা স্কুলের শিক্ষার ভেতর থেকে উঠে আসা দরকার। এ কাজ সফল করতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক সংযোগ ও সক্রিয়তা অপরিহার্য।
 
এজন্য চোখ তৈরি করতে হবে। প্রকৃতি দেখার চোখ, ভালোবাসা গড়ে তোলার মরমী মন। গল্প লিখুন, প্রবন্ধ লিখুন, কবিতা-ছড়া লিখুন। এসব হাঁটা চলার নানা পদক্ষেপে কখন যে জীব বৈচিত্র্য সম্পদ সুরক্ষায় আপনি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তা হয়ত জানতেও পারবেন না। এ ভাবেই আপনি একদিন জলজ গাছ বা পিপঁড়ে কিংবা প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ হয়ে যেতেই পারেন। বা আপনার পছন্দসই অন্য কোন বিষয়ের বিষেশজ্ঞ।
 
এসব কথা বলার কারণ গোটা ভারতবর্ষ বা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে প্রকৃতি ক্ষয় ঘটে চলেছে দুর্নিবার গতিতে। যা মানব বিনাশের এক ভয়াবহ ইঙ্গিতও বটে। পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে উন্নয়নের মারণ যজ্ঞে। বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী। রাজ্য-কেন্দ্রীয় সরকার বাণিজ্য নীতির বিকাশে বদ্ধ পরিকর। ব্যক্তি মালিকানা নির্ভর ও কর্পোরেট পুঁজি ঝাঁপিয়ে পড়েছে উন্নয়নের ধ্বংস যজ্ঞে। ভোগবাদী অর্থনীতিকে সচল রাখতে আমরা এক অনিঃশেষ ধ্বংসের কিনারায় যেখানে জল-স্থল-অন্তরীক্ষ দূষণের মারণ থাবায় রাহুগ্রস্ত। তাহলে উপায়?
 
শান্ত হয়ে, ধীর-স্থির-সৌম্য বিবেচনায় নিজের প্রয়োজনকে যাচাই করা। সব থেকে কম প্রয়োজনে নিজেকে সন্তুষ্ট রাখা। বৈভব নয়, সুচারু সহজ জীবনছন্দ হোক আমাদের লক্ষ্য। পরস্পরের নিবিড় বন্ধুতায়, মানুষ তথা সমগ্র জীব সম্পদের সুরক্ষা ভাবনায় যেন আমরা সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করি।
 
আজও কোকিলের কুহুরব ভেসে আসে গভীর রাতে। চোখ গেল (পাপিয়া) ডেকে চলেছে অবিশ্রান্ত কলরবে কুবো(কানাকুয়া)-র ডাক কানে আসে একটু সামান্য হাঁটাচলা করলে। বসন্ত সমাগমে পাতা ঝরা আর নতুন পাতার প্রাণপল্লবে প্রকৃতিতে জাগে এক মস্ত প্রাণের শিহরণ। দিনকয়েক আগে সকালে দেখি সাহেবি বুলবুলের ব্যস্ত আনাগোনা। দোয়েল, ফিঙে, রামগাঙরা, শালিক এরা তো আছেই।
 
তবে আজ সকলেরই কষ্ট আর লাঞ্ছনা ক্রমবর্ধমান। চড়াই প্রায় হারিয়ে যাবার পর্যায়ে। কাকও বেশ কম। ইলেকট্রিক তারের নীচে প্রায়শই তাদের স্তব্ধ দেহ মনকে বেদনায় ভারাক্রান্ত করে। গাছ কাটা চলছে অবাধ স্বাধীনতায়। কিছু বাণিজ্যিক গাছ রোপণ করা হয় অর্থনৈতিক ভাবনার বর্শবর্তী হয়ে। বড়ো গাছ (এক/দেড়শো বছরের প্রাচীন) প্রায় নেই বললেই চলে। বাংলার অতিপরিচিত বট, অশ্বত্থ এখন দুর্লভের তালিকায়।
 
জলাশয়ের এলাকা অতি দ্রুত ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে সর্বত্র। পুকুর-খালবিলের অভাবে বৃষ্টির জলের মাটির গভীরে প্রবেশ প্রায় বন্ধ। জলস্তর এত নেমে গেছে যে সাধারণ টিউবয়েলে জল উঠছে না। শ্যালো-ডিপ-টিউবয়েল প্রকৃতি ধ্বংসের প্রধান কারিগর। নদী জলশূন্য। মাটির জল শুষে নিচ্ছে শহর আর শহরতলি। লাখো ডিপ টিউবওয়েল প্রতিদিন হরণ করছে প্রকৃতির সংরক্ষিত জল সঞ্চয়ের ভাণ্ডারকে। এক কঠিন জীবন সঙ্কটের দ্বারে আমরা হাজির। অনেকে বলছেন, বাঁচার বিকল্প কোন পথ আজ আর খোলা নেই।
 
তবু আমরা আশাবাদী। ভোগবাদকে সীমায়িত করে শুরু হোক এক নতুন প্রভাত-যা সর্বতোভাবে পরিবেশবান্ধব। প্রাচীন ভারতের গ্রামীণ জীবনযাত্রা ছিল একান্ত ভাবেই পরিবেশরক্ষক। আধুনিক ব্যবস্থার মধ্যেও সেই ভাবনাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা কিভাবে করা যায়, সেই বিষয়ে নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা আলোচনা উঠে আসুক। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে আমাদের এই পত্রিকা। সবাইকে অনুরোধ জানাই ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে আপনাদের সাধ্য অনুযায়ী জীববৈচিত্র্য তথা পরিবেশ সুরক্ষায় ব্রতী হোন।
Select গ্রাহক চাঁদা *

Product details

জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা বার্তা গোবরডাঙা জীববৈচিত্র ব্যবস্থাপনা সমিতি কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত একটি ত্রৈমাসিক বাংলা পত্রিকা, যার প্রধান উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণ, বিশেষত ছাত্রদের, মধ্যে জীববৈচিত্র্য, বাস্তুতন্ত্র তথা পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার ঘটানো। 

আমাদের জীববৈচিত্র্য সম্পদ আমরাই রক্ষা করব, পরম যত্নে- আপন মমত্ব ভরা আন্তরিকতায়। স্কুলে ছোটোবেলা থেকে চাই পরিবেশবান্ধব শিক্ষায় হাতেখড়ি। প্রকৃতির চারপাশে যা দেখি - গাছপালা, ফড়িং, প্রজাপতি, সাপ, ব্যাঙ, ইদুর ইত্যাদি সবাই পরিবেশের বন্ধু। এদের রক্ষার বার্তা স্কুলের শিক্ষার ভেতর থেকে উঠে আসা দরকার। এ কাজ সফল করতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক সংযোগ ও সক্রিয়তা অপরিহার্য।
 
এজন্য চোখ তৈরি করতে হবে। প্রকৃতি দেখার চোখ, ভালোবাসা গড়ে তোলার মরমী মন। গল্প লিখুন, প্রবন্ধ লিখুন, কবিতা-ছড়া লিখুন। এসব হাঁটা চলার নানা পদক্ষেপে কখন যে জীব বৈচিত্র্য সম্পদ সুরক্ষায় আপনি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তা হয়ত জানতেও পারবেন না। এ ভাবেই আপনি একদিন জলজ গাছ বা পিপঁড়ে কিংবা প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ হয়ে যেতেই পারেন। বা আপনার পছন্দসই অন্য কোন বিষয়ের বিষেশজ্ঞ।
 
এসব কথা বলার কারণ গোটা ভারতবর্ষ বা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে প্রকৃতি ক্ষয় ঘটে চলেছে দুর্নিবার গতিতে। যা মানব বিনাশের এক ভয়াবহ ইঙ্গিতও বটে। পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে উন্নয়নের মারণ যজ্ঞে। বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী। রাজ্য-কেন্দ্রীয় সরকার বাণিজ্য নীতির বিকাশে বদ্ধ পরিকর। ব্যক্তি মালিকানা নির্ভর ও কর্পোরেট পুঁজি ঝাঁপিয়ে পড়েছে উন্নয়নের ধ্বংস যজ্ঞে। ভোগবাদী অর্থনীতিকে সচল রাখতে আমরা এক অনিঃশেষ ধ্বংসের কিনারায় যেখানে জল-স্থল-অন্তরীক্ষ দূষণের মারণ থাবায় রাহুগ্রস্ত। তাহলে উপায়?
 
শান্ত হয়ে, ধীর-স্থির-সৌম্য বিবেচনায় নিজের প্রয়োজনকে যাচাই করা। সব থেকে কম প্রয়োজনে নিজেকে সন্তুষ্ট রাখা। বৈভব নয়, সুচারু সহজ জীবনছন্দ হোক আমাদের লক্ষ্য। পরস্পরের নিবিড় বন্ধুতায়, মানুষ তথা সমগ্র জীব সম্পদের সুরক্ষা ভাবনায় যেন আমরা সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করি।
 
আজও কোকিলের কুহুরব ভেসে আসে গভীর রাতে। চোখ গেল (পাপিয়া) ডেকে চলেছে অবিশ্রান্ত কলরবে কুবো(কানাকুয়া)-র ডাক কানে আসে একটু সামান্য হাঁটাচলা করলে। বসন্ত সমাগমে পাতা ঝরা আর নতুন পাতার প্রাণপল্লবে প্রকৃতিতে জাগে এক মস্ত প্রাণের শিহরণ। দিনকয়েক আগে সকালে দেখি সাহেবি বুলবুলের ব্যস্ত আনাগোনা। দোয়েল, ফিঙে, রামগাঙরা, শালিক এরা তো আছেই।
 
তবে আজ সকলেরই কষ্ট আর লাঞ্ছনা ক্রমবর্ধমান। চড়াই প্রায় হারিয়ে যাবার পর্যায়ে। কাকও বেশ কম। ইলেকট্রিক তারের নীচে প্রায়শই তাদের স্তব্ধ দেহ মনকে বেদনায় ভারাক্রান্ত করে। গাছ কাটা চলছে অবাধ স্বাধীনতায়। কিছু বাণিজ্যিক গাছ রোপণ করা হয় অর্থনৈতিক ভাবনার বর্শবর্তী হয়ে। বড়ো গাছ (এক/দেড়শো বছরের প্রাচীন) প্রায় নেই বললেই চলে। বাংলার অতিপরিচিত বট, অশ্বত্থ এখন দুর্লভের তালিকায়।
 
জলাশয়ের এলাকা অতি দ্রুত ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে সর্বত্র। পুকুর-খালবিলের অভাবে বৃষ্টির জলের মাটির গভীরে প্রবেশ প্রায় বন্ধ। জলস্তর এত নেমে গেছে যে সাধারণ টিউবয়েলে জল উঠছে না। শ্যালো-ডিপ-টিউবয়েল প্রকৃতি ধ্বংসের প্রধান কারিগর। নদী জলশূন্য। মাটির জল শুষে নিচ্ছে শহর আর শহরতলি। লাখো ডিপ টিউবওয়েল প্রতিদিন হরণ করছে প্রকৃতির সংরক্ষিত জল সঞ্চয়ের ভাণ্ডারকে। এক কঠিন জীবন সঙ্কটের দ্বারে আমরা হাজির। অনেকে বলছেন, বাঁচার বিকল্প কোন পথ আজ আর খোলা নেই।
 
তবু আমরা আশাবাদী। ভোগবাদকে সীমায়িত করে শুরু হোক এক নতুন প্রভাত-যা সর্বতোভাবে পরিবেশবান্ধব। প্রাচীন ভারতের গ্রামীণ জীবনযাত্রা ছিল একান্ত ভাবেই পরিবেশরক্ষক। আধুনিক ব্যবস্থার মধ্যেও সেই ভাবনাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা কিভাবে করা যায়, সেই বিষয়ে নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা আলোচনা উঠে আসুক। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে আমাদের এই পত্রিকা। সবাইকে অনুরোধ জানাই ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে আপনাদের সাধ্য অনুযায়ী জীববৈচিত্র্য তথা পরিবেশ সুরক্ষায় ব্রতী হোন।

You might like these